25 avril, 2009

Media Review April'09কে কার এজেন্ট এবং একজন সুনিতা পালকে নিয়ে রিপোর্ট

কে কার এজেন্ট এবং একজন সুনিতা পালকে নিয়ে তিনটি রিপোর্ট (১৯-২৫ এপ্রিল)
ফারিয়া জামান

কে কার এজেন্ট আওয়ামী লীগ সাধারণ সাম্পাদক আবদুল জলিল এমপির একটি মন্তব্য ও তার ফলোআপ নিযে এ সপ্তাহের পুরোটা জুড়েই পত্রিকার পাতা ছিলো বেশ সরগরম। ২২ এপ্রিল প্রায় সবকটি পত্রিকা জলিলের �বর্তমান সরকারের অনেক মন্ত্রী ডিজিএফআইর পেইড এজেন্ট� মন্তব্যটি হাইলাইট করে। সমকাল লিখেছে, নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গতকাল মঙ্গলবার সমকালসহ ৬টি সংবাদপত্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, বর্তমান মন্ত্রীসভার অনেক সদস্য ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) পেইড এজেন্ট। সমকাল ৬টি সংবাদপত্রের নাম প্রকাশ না করলেও ২২ এপ্রিল দেখা যায়, আমার দেশ, মানবজমিন, নয়া দিগন্ত, যুগান্তর, আমাদের সময় এটিকে লীড নিউজ হিসেবে স্থান দিয়েছে, যদিও প্রথম আলো ও ইত্তেফাকের পাঠকরা তোলপাড় করা খবরটি থেকে ঐদিন বঞ্চিত হয়। তবে সমকাল ও নয়া দিগন্তের রিপোর্ট দুটি ছিলো বিস্তারিত ও অভিন্ন। পত্রিকা দুটি লিখেছে, আমির হোসেন আমু, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডিজিএফআইয়ের দালালি করেছেন উল্লেখ করে আবদুল জলিল বলেন, এ চারজন নেতা সংস্কারের নামে শেখ হাসিনাকে সরাতে চেয়েছিলেন। ওয়ান ইলেভেনে ডিজিএফআইয়ের (সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা) দালালি করে যারা সুবিধা নিয়েছে, তারা এখনো সুবিধা নিচ্ছে। বর্তমান সরকারের মধ্যেও ওই সুবিধাভোগীরা রয়েছে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীসভায় অনেক মন্ত্রী রয়েছেন যারা ডিজিএফআইয়ের �পেইড এজেন্ট�। দক্ষ ও ত্যাগী নেতাদের নিষ্ক্রিয় করে রাখায় বর্তমানে আওয়ামীলীগের দলীয় কর্মকাণ্ড মোটেও ভালো হচ্ছে না। এই সুযোগে অনেক সুবিধাভোগী ঢুকে দলের ক্ষতি সাধন করছে। দিলকুশায় নিজের বাণিজ্যিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আবদুল জলিল ওয়ান ইলেভেন-পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। কথাগুলো বলতে গিয়ে অনেকটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন আবদুল জলিল। ক্ষুব্ধ গলায় তিনি বলেন, সব ব্যাটা ওই সময় ডিজিএফআইয়ের দালালি করেছে। কে দালালি করেনি, সাহস থাকলে বলুন। আমু, রাজ্জাক, তোফায়েল, সুরঞ্জিত সবাই দালালি করেছে। তখন কারা কারা সকাল-বিকাল গুলশানে যেত তা কি আমরা জানি না? সৈয়দ আশরাফের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, কারা ওই সময় সকালে ডিজিএফআইয়ের সাথে মিটিং করে বিকালে দলের মিটিংয়ে অংশ নিয়েছে তা দেশের মানুষ সবাই জানে। প্রথমে পালিয়ে কেন লন্ডনে গেল, পরে কোন নিশ্চয়তা পেয়ে আবার দেশে ফিরে এলো, দেশের মানুষ বুঝি তা বুঝে না! উল্লেখ্য, এলজিআরডিমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২০০৭ সালের ১৫ জুলাই লন্ডনে যান এবং ২৮ জুলাই ফিরে আসেন। আবদুল জলিল বলেন, আমার কী অপরাধ? আমি তার (শেখ হাসিনার) পক্ষে স্ট্যান্ড নেয়ার কারণেই কি এই শাস্তি? যারা ষড়যন্ত্র করল তারা ভালো থাকবে আর আমাকে শাস্তি পেতে হবে, এটা তো হয় না। আমার দলের কিছু নেতা সংস্কারের নামে যখন সক্রিয় হলো, আমি তখন নেত্রীর পক্ষে অবস্থান নিলাম। বললাম, শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সংস্কার হবে। তখন ডিজিএফআইকে বোঝানো হলো, জলিল সাহেবকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে এগুতে পারব না। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু যদি এরকম করেন তাহলে গণতন্ত্রের কথা আর বলবেন না। ওটাকে বাস্কেটে ছুড়ে ফেলে দিন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা লিখে দিন। আমি তো সবই হারিয়েছি। এখন আমি কাউকেই ভয় পাই না। আমি আমার জায়গায় থেকে �ফাইট� করে যাব। অন্যায়ের প্রতিবাদ করব। বর্তমানে দলীয় গঠনতন্ত্র লংঘন করে দল চলছে উল্লেখ করে আবদুল জলিল বলেন, কাউন্সিল আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে। তা পালন করতে দেয়া হবে না। এটা কোন ধরনের অন্যায়। দলের দ্বিতীয় যুগ্গ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নাম উল্লেখ না করে ইঙ্গিতে আবদুল জলিল বলেন, �দুই নম্বর লোক সভা ডাকে। দাওয়াত কার্ড ছাপায়। এক সময় এই ব্যক্তি সকালে-বিকেলে ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে বৈঠক করত। আমি থাকতে দু�নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম) মিটিং ডাকবে, তার স্বাক্ষরিত দাওয়াতপত্র আমাকে পাঠানো হবে, সেখানে আমি যাব কেন? এটা আইনসম্মত কিনা, সভানেত্রীর নির্দেশে এটা হচ্ছে কিনা, যদি হয়ে থাকে, বলে দিন আমি আমার ভবিষ্যৎ চিন্তা করব�। তিনি জানান, মাসখানেক হলো চিঠি পাঠানো হলেও সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে তাকে কিছুই জানাননি। জেলে থাকাকালে চিঠি দেয়া প্রসঙ্গে আবদুল জলিল বলেন, আমার স্ত্রী আমার মুক্তির আবেদন করে কয়েক লাইনের একটি চিঠি পড়েছেন। ওই সময় ডিজিএফআই থেকে ওই চিঠি সরবরাহ করা হয়েছে। একজন বন্দি মানুষকে দিয়ে চিঠি দেয়ানো কতটা আইনগত � প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, চিঠিতে স্বাক্ষর করানোর জন্য রাত ২/৩টা পর্যন্ত আমার ওপর অত্যাচার করা হতো। ডিজিএফআইয়ের কর্নেল আফজাল ও কর্নেল সাঈদ হাসপাতালে (ল্যাবএইড) গিয়ে আমার ওপর চাপ প্রয়োগ করত। শেষে একদিন আমাকে বলা হলো, স্বাক্ষর না করলে আপনার স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেফতার করা হবে। তখন আমি তাদের কথা চিন্তা করে স্বাক্ষর করি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আমির হোসেন আমু হেসে ওঠেন, কিন্তু কোনো মন্তব্য করেননি। আবদুর রাজ্জাক বলেন, �কে কার এজেন্ট আমি জানি না। আমি কারোর এজেন্সি করি না। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কাজ আমার দ্বারা হবে না। আমি দেশকে ভালোবাসি। আমি জীবনভর মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাব।� তোফায়েল আহমেদ ভারতে থাকায় তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও আওয়ামী লীগ সাধারণ সাম্পাদকের বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে ছোট্ট পাদটীকা দিয়েছেন- �সবাইকে ক্ষ্যাপাইলে চলবে কী করে?� ২৩ এপ্রিল ইত্তেফাক, নয়া দিগন্ত, প্রথম আলো লিখেছে, জলিলের মন্তব্যে আওয়ামী লীগে তোলপাড়, সমকাল লিখেছে, অনিশ্চয়তার মুখে জলিলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। ২৪ এপ্রিল সমকালের খবর, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেই জলিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমাদের সময়, খামোশ হয়ে গেছেন জলিল, ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ও শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর কী করবেন? আমার দেশ, জলিল হতাশা থেকে এমন মন্তব্য করেছেনঃ বাণিজ্যমন্ত্রী ও শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর আবদুল জলিলের ভাগ্য নির্ধারণ, নয়া দিগন্ত ও ইত্তেফাক, জলিলের বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হবেঃ মতিয়া, এসব শিরোনামে করে। ২৪ এপ্রিল সমকাল লিখেছে, আবদুল জলিলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। সৌদি আরব থেকে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রবীণ এ নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী সপ্তাহে এই বৈঠক ডাকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নীতিনির্ধারক নেতারা। এর আগে মঙ্গলবার জনাব জলিলের বিতর্কিত মন্তব্যের পরদিন বুধবার কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি বৈঠক ডেকেও পরে তা বাতিল করা হয়। শেখ হাসিনার অনুপস্থিতে বৈঠকে অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কায় বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই দিনে আমাদের সময় লিখছে, দলের চার শীর্ষনেতা ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বোমা ফাটানোর পর খামোশ হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল। এদিকে তার ওই বক্তব্যে দলের নেতা এবং মন্ত্রীরা তার ওপর যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। কেউ কেউ আবার জানতে চেয়েছেন পেইড এজেন্ট বলে তিনি পোস্টপেইড না প্রিপেইড কী বুঝিয়েছেন। আরেক দল তার বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে পাল্টা অভিযোগ এনে বলেছেন, যারা দালালি করেছে তারাই বলতে পারবে কারা দালাল। তবে পাল্টা এসব অভিযোগের ব্যাপারে আব্দুল জলিলের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। গতকাল বেশ কয়েকবার তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কথা বলেননি। মোবাইলে কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি কোনো কলই রিসিভ করেননি। শুধু দু�একবার তার ব্যক্তিগত সহকারি জানান, স্যার এখন ব্যস্ত আছেন। পত্রিকাটি একই দিনে রিপোর্ট করেছে, শেখ হাসিনা দেশে ফেরার পর কী করবেন? জলিল সম্প্রতি সরকার ও দলের বিরুদ্ধে মিডিয়ায় কথা বলায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল দেশে ফেরার পর আব্দুল জলিলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রধানমন্ত্রী এ যাত্রায় আব্দুল জলিলের ব্যাপারে কতটা কঠোর হবেন তা জানার অপেক্ষায় আওয়ামী লীগ। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রী জলিলের ওপর ক্ষুব্ধ হলেও কঠোর কোনো সিদ্ধান্ত এই মুহূর্তে নিচ্ছেন না। তবে দলের মধ্যে শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আব্দুল জলিলকে শোকজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। জলিল ইসুতে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি যেনো কোনো ফায়দা লুটতে না পারে সে ব্যাপারেও সজাগ প্রধানমন্ত্রী। একই দিনে এ ধরনের রিপোর্ট করে আমার দেশ। আবদুল জলিলের বক্তব্যে সরকার ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের অনেকে বর্তমানে বিচলিত। এমনিতেই সরকার গঠনের পর থেকে দলটি একের পর এক সমস্যায় জর্জরিত, তার ওপর দল ও সরকারের বিষোধগার করে আবদুল জলিলের বক্তব্য আগুনে ঘি ঢালার মতো পরিস্হিতি সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগ না পারছে বিষয়টিকে হজম করতে আর না পারছে ফেলতে। ২৪ এপ্রিল নয়া দিগন্ত তাদের নওগাঁ প্রতিনিধির বরাধ দিয়ে লিখে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আবদুল জলিলের বক্তব্যের সমালোচনা ও তার শাস্তি দাবি করায় তার নিজ এলাকা নওগাঁর আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে না চাইলেও আবদুল জলিলের প্রতি যে �অবিচার� করা হয়েছে তার কঠোর সমালোচনা করেছেন। গোটা নওগাঁর দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও অফিস-আদালতসহ সবখানে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ মালেক মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, �এ বিষয়ে মন্তব্য করার ধৃষ্টতা আমার নেই। তবে আবদুল জলিলের প্রতি সহানুভূতি থাকাটাই স্বাভাবিক�। উল্লেখ্য, আবদুল জলিল ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আনুগত্য প্রকাশের কারণেই ২০০৭ সালের ২৮ মে তিনি গ্রেফতার হন। ২০০৪ সালের ৩০ এপ্রিল জোট সরকারের পতন নিয়ে ডেডলাইন ঘোষণা করেন, ২০০৭ সালের ২ জুলাই কারাবন্দি থাকা অবস্থায় রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে চিঠি দেন, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে ২০০৮ সালের ৩১ জুলাই দেশে ফিরেন। ২০০৭ সালের ৫ জুলাই জলিল পত্নী রেহেনা জলিল তার স্বামীর মুক্তির আবেদন জানিয়ে তৎকালীন রাষ্টপতি ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি পাঠানোর তথ্য প্রকাশ করলে এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এছাড়াও যৌথ বাহিনীর রিমান্ডে থাকাকালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বক্তব্যসহ প্রকাশিত সিডি নিয়েও ব্যাপক হৈচৈ হয়। এর আগে ২০ এপ্রিল আব্দুল জলিল এনটিভির সাথে সাক্ষাতকার দেন যা পরের দিন আমার দেশ ও আমাদের সময়ে ছাপা হয়। আব্দুল জলিল বলেন, অপেক্ষায় আছি সভানেত্রীর ভুল ভাঙার। আমার নেত্রীতো বলেছেন, বাঁচার জন্য আমার বিরুদ্ধে বলতে হলেও বলেন। তারপরেও আমাকে শাস্তি দেয়া ওনার ঠিক হয়নি। তাহলে হয় উনি সেদিন মিথ্যা কথা বলেছেন, না হয় পরবর্তীকালে উনি মানুষের মাধ্যমে মিসগাইড হয়েছেন। শেখ হাসিনার প্রতি আমার চেয়ে লয়াল একটি লোক উনি বের করুন। আব্দুল জলিল তার বর্তমান অবস্থার জন্য কোনো কোনো নেতার দায়িত্বহীনতা এমনকি কারো কারো ইন্ধনও আছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, উনি দেশ চালাচ্ছেন। এতো বড় একটি দল চালাচ্ছেন। ওনাকে বোঝাতে হবে কেন? উনি বুঝতে পারেন না? উনি আমাকে বলেননি যে, জলিল ভাই সবাই আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে আপনি আমার পক্ষে স্ট্যান্ড নিয়েছেন। মতিয়া চৌধুরী বলেননি যে, জলিল ভাই আপনিই একমাত্র লোক যে শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এরা সব ভুলে গেছে? এখানে যদি একটি গাছ থাকতো তাহলে সেও বলতে পারতো যে, একটি লোকের বিরুদ্ধে অন্যায় হচ্ছে। আমি মন্ত্রিত্বের জন্য লালায়িত না। কিন্তু আমি দলের নির্বাচিত সেক্রেটারি। আমি আমার দলের দায়িত্বপালন করতে চাই। একজন সুনিতা পাল এবং তিন টাকার পত্রিকায় তিনটি রিপোর্ট সুনিতা পাল বর্তমানে বেশ আলোচিত নাম। তাকে নিয়ে মোহাম্মদ এ আরাফাতের একটি মন্তব্য কলাম প্রকাশ করে আমাদের সময় ১৯ এপ্রিল। �কে এই সুনিতা পাল এবং কী তার পরিচয় ও উদ্দেশ্য?� শিরোনামে প্রকাশিত মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত আমাদের সময় পত্রিকায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জনৈক সুনিতা পালের �হত্যাকারীদের পক্ষে মায়া কান্না পরিহার করুন� শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে লেখাটির বিষয়বস্তু ও লেখিকার অভিপ্রায় সম্পর্কে সচেতনমহলে বিশেষ কৌতূহলের জন্ম হয়। একটি ওয়েবসাইটে পাওয়া গিয়েছে যে, তিনি ১৯৫২ সালে ভারতের কোচিনে জন্মগ্রহণ করেন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সাংবাদিকতায় তার মাস্টার্স ডিগ্রি আছে। বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা, সংবাদপত্র ও বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকায় লেখার অভিজ্ঞতাও তার রয়েছে। কিন্তু বিস্ময়কর যে, অনেক অনুসন্ধান করেও ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কোনো নথিতেই উল্লিখিত বিষয়দ্বয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনকারী কোনো সুনিতা পালের নাম পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে বলতেই হয়, নামটি হয় ভুয়া, না হয় কারো তা ছদ্মনাম। দ্বিতীয় পর্যায়ে খোঁজা হয় সুনিতা পালের সঙ্গে যেসব বিশিষ্ট ব্যক্তির লিংক বা সম্পর্ক রয়েছে তাদের পরিচয়। এবার যে সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে তা আরো অদ্ভূত। দেখা গেছে, আমাদের দুটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও মতিউর রহমান ছাড়াও শাহরিয়ার কবির, প্রফেসর ইউনূস এবং আমাদের সময় পত্রিকার নাঈমুল ইসলাম খান, সুমি খান, জাহিদ আল মামুন, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এমনকি কাজী আজিজুল ইসলামের সঙ্গে সুনিতা কোনো না কোনোভাবে সম্পর্কিত। সুনিতা আখ্যান এবং তার পরিচয় ও অভিসন্ধি অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় আরো কিছু তথ্য আমরা জানতে পেরেছি। তার আবিষ্কারক বা প্রবর্তক আসলে সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী ছদ্মনামের জনৈক ব্যক্তি। ব্যারিস্টার তানিয়া আমির লিখিত �দ্য ফ্রাসেড বিহাইন্ড এ প্রিটি ফেস� নামে একটি প্রবন্ধ আমেরিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর বেশ কিছু লোক গা ঝাড়া দিয়ে বসেন। তার কখনো একক নামে কখনো আবার যৌথ নামে বিরূপ মন্তব্যসহ প্রবন্ধটির সমালোচনা করতে গলদঘর্ম হয়ে উঠে। তাদেরই একজন এ শোয়েব চৌধুরী। তার পরিচয় সন্ধান করতে গিয়েই আসল সত্য বেরিয়ে এসেছে। শোয়েব একটি রাজনৈতিক দলের আমেরিকান লবিস্ট ও ইহুদিবাদের সমর্থক। সুনিতা পাল আসলে একটি ছদ্মনাম বা ভুয়া নাম। আরাফাতের মন্ত্যবের পালটা জবাব সুনিতা না দিলেও এগিয়ে এসেছে তার এদেশীয় বন্ধু আমাদের সময়ের সাবেক বিশেষ সংবাদদাতা সালাহ্� উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী। �সুনিতা পাল, আরাফাত, আমাদের সময়� শিরোনামে ২২ এপ্রিল একই প্রত্রিকায় শোয়েব চৌধুরী লেখেছেন, কে এই আরাফাত যিনি ভারতের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনিতা পালের মাস্টার্স ডিগ্রির অনুসন্ধান করেছেন বলে দাবি করেছেন। বুঝলাম তার ক্ষমতা আছে। কারণ বাংলাদেশের একজন সম্পাদক হয়েও এত দ্রুত আমি হয়তো কারো সম্পর্কে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিতে পারতাম না। আরাফাত তার লেখায় সুনিতা পালের সঙ্গে সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, মতিউর রহমান চৌধুরী, সাহসী সাংবাদিক সুমি এবং জাহিদ আল আমিনের (জাহিদ আল মামুন নয়) �যোগসূত্র� আবিষ্কার করেছেন। তার অবগতির জন্য বলছি, কেবল সুমি খান বা জাহিদ আল আমিনই নয়, সুনিতা তার লেখনিতে সাংবাদিক টিপু সুলতান এবং আব্দুল্লাহ আল আমিন বিপ্লবের মতো নির্যাতিত সাংবাদিকের পক্ষেও কলম ধরেছেন। নিউইয়র্ক টাইমস থেকে শুরু করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, বার্লিনার সেইতুং, দ্য অস্ট্রেলিয়ান গার্ডিয়ান, ওয়াশিংটন টাইমস, শিকাগো ট্রিবিউন সবখানেই আমাকে নিয়ে একাধিক সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় ছাপা হয়েছে এবং হচ্ছে। এ কারণেও আমার �সুনিতা পাল� সাজার কোনোই প্রয়োজন নেই। তিনি (আরাফাত) বলেছেন, আমি (সালাহ উদ্দিন) ইহুদিবাদের সমর্থক। এটা কি কোনো নতুন কথা? এটাতো সবাই জানে। এতে পাপের বা অপরাধের কী পেলেন আরাফাত? সুনিতা পাল অনেক পত্রিকার পাশাপাশি আমার সম্পাদিত ইংরেজি সাপ্তাহিক ব্লিটজ-এর একজন লেখক। ২১ এপ্রিল আমাদের সমযের সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান লিখছেন, দৈনিক আমাদের সময়ের ১৯ এপ্রিল সংখ্যায় �কে এই সুনিতা পাল এবং কী তার পরিচয় ও উদ্দেশ্য?� এই শিরোনামে মোহাম্মদ এ আরাফাতের একটি অসম্পাদিত লেখা ভুলবশত প্রকাশিত হয়ে গেছে, ঐ লেখার কিছু অংশ সম্পাদনা করে বাদ দেয়ার পরেও কীভাবে অসম্পাদিত লেখাটি ছাপা হয়ে গেল এর দায় নিয়ে আমাদের সময়ের সংশ্লিষ্ট একজন সাংবাদিক তাৎক্ষণিকভাবে অব্যাহতি নিয়েছেন। ঐ কর্মী আমার প্রিয়ভাজন এবং অব্যাহতি নেয়ার পরও আমি তার আন্তরিক শুভাকাঙ্ক্ষী। দৈনিক আমাদের সময়ে হঠাৎ হঠাৎ অসম্পাদিত লেখা প্রকাশের কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, কখনো কখনো সেটা দায়িত্বজ্ঞানহীন সাংবাদিকতাও হয়ে যায়। আমি এর জন্য দুঃখিত এবং এই পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে আমাদের সময়ের সকলকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই। উল্লেখ্য সুনিতা পাল, সালাহ্� উদ্দিন শোয়েব ছাড়াও তাদের আরেক বন্ধু ইহুদিবাদী ড. রিচার্ড বেনকিন আমাদের সময়ের নিয়মিত লেখক। পাঠক অবশ্য ধারনা করতে পারেন, শোয়েব চৌধুরীরা দৈনিক আমাদের সমযের জন্য কতো গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি যাদের বিরুদ্ধে লেখার জন্য সম্পাদকের �প্রিয়ভাজন�নেরও চাকরী চলে যায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া ও সৌদি সফর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর অংশ হিসেবে তদন্ত সংস্হা ও আইনজীবী প্যানেল ঘোষণা গতকাল শেষ মুহুর্তে স্হগিত হয়ে গেছে। প্রথম আলো, আমাদের সময়, সমকাল, নয়া দিগন্ত খবরটি গুরুত্বের সাথে ছাপে। তবে আমার দেশ ২১ এপ্রিল এটাকে লিড নিউজ করে। আমার দেশ লিখেছে, একদিন আগেই আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের ঘটা করে জানিয়েছিলেন গতকাল দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তদন্ত সংস্হা ও আইনজীবী প্যানেলের ঘোষণা দেবেন এবং অন্যান্য কার্যক্রম সাংবাদিকদের অবহিত করবেন। কিন্তু গতকাল সংবাদ সম্মেলনে উপস্হিত হয়ে আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব থেকে ফিরে আসার পর এ বিষয়ে ঘোষণা দেয়া হবে। বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর কার্যক্রম স্হগিত বা বিলম্বিত হওয়ার ব্যাপারে আইনমন্ত্রীর বিদেশে চলে যাওয়া এবং যাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ �নানা কারণ�-এর কথা উল্লেখ করেন আইন প্রতিমন্ত্রী। তবে নানা কারণের কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তার সৌদি আরব যাত্রার প্রাক্কালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর কাজটি স্হগিত করে দেন। সৌদি আরব সফরে গিয়ে কোনো বিব্রতকর পরিস্হিতির মুখোমুখি পড়তে চান না তিনি। সৌদি সফর থেকে ফিরে আসার পর এ নিয়ে তৎপরতা শুরুর বিষয়ে মত দেন তিনি, যা গতকাল আইন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করার জন্য কিংবা এ থেকে পিছিয়ে আসার জন্য কোনো আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ওপর এ পর্যন্ত কোনো চাপ আসেনি। আর আমরা কাউকে ভয়ও পাই না। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটিই শেখ হাসিনার প্রথম বিদেশ সফর। আমার দেশ লিখেছে, সৌদি বাদশাহর জন্য উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণখচিত মিনি চেয়ার, নকশি কাঁথা এবং বিভিন্ন ধরনের চিত্রকর্ম নিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৪ তারিখ দেশে ফিরবেন। আমার দেশ ছাড়া মানব জমিনও লিখেছে, এর আগে দু�বার প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফর স্হগিত হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরের কথা ছিল। সরকারের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও সৌদি বাদশাহ সময় দিতে না পারায় ওই সফর স্হগিত করা হয়। পরে ৭ মার্চ সৌদি আরব সফরের জন্য আবার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। বিডিআর বিদ্রোহের কারণে ওই সফরও বাতিল করা হয়। আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইয়াহিয়া খান ও টিক্কা খানসহ পাকিস্তানের কোনো আর্মি অফিসার এবং এ দেশে ওই সময় যারা হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার লোককে বিচারের আওতায় আনা আমাদের টার্গেট নয়। আমাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছে চিহ্নিত কয়েকজনকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। এটি অত্যন্ত সুক্ষ্ম, কঠিন ও জটিল একটি বিষয়। সবদিক ভেবেচিন্তে আমাদের এগোতে হচ্ছে। আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা হাজার হাজার যুদ্ধাপরাধীর বিচার করব না। শুধু চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন নাম বলা যাবে না। তারা চিহ্নিত হয়ে আছে। বিভিন্ন গবেষণা, পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত এবং দলিল-প্রমাণাদির ভিত্তিতে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন। সরকার যদি যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত করেই রাখে তাহলে তদন্ত সংস্হা নিয়োগের প্রয়োজন কি? শুধু মামলা দায়ের করলেই তো হয়ে গেল। এ প্রশ্নের জবাবে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, মামলা দায়েরের প্রয়োজন নেই। সরকারের সিদ্ধান্তই মামলা কিংবা এজাহার হিসেবে গণ্য হবে। টিক্কা খান, ইয়াহিয়া খান ও যুদ্ধে অংশ নেয়া পাকিস্তানের সেনাসদস্যদের বাইরে রেখে তাদের এদেশীয় সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের উদ্যোগ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। কেননা তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা কোনো চাট্টিখানি কথা নয়। আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে। তদন্ত সংস্হা হবে ৫ থেকে ৭ জনের। একজন প্রধান আইনজীবীও মামলা পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেয়া হবে। আইনে অপরাধী হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে যারা সরাসরি যুদ্ধ বা গণহত্যা চালিয়েছে তারাই যুদ্ধাপরাধী। ওই আইনে তাদেরই বিচার হবে। কিন্তু তাদেরকে বাদ রেখে তাদের সহযোগীদের বিচারে সরকারের উদ্যোগ আইনসম্মত কিনা এ প্রশ্নের জবাবে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্যোগ আইনসম্মত হবে। ১৯৭১ সালে যুদ্ধে আমেরিকা পাকিস্তানি বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগী ছিল। এখন তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা নেয়াটা উচিত হবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউএনডিপির কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে আমরা প্রস্তাব দেইনি। তারাই আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছি। কতদিনের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে জানতে চাইলে আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, �শুভস্য শীঘ্রম�। তবে আমরা আশা করি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আগেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। বিচারের ক্ষেত্রে কি ধরনের তথ্য-প্রমাণ উপস্হাপন করা হবে এ প্রশ্নের জবাবে কামরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয় নিয়ে যারা কাজ করেছেন বা করছেন তাদের কাছে অনেক তথ্য রয়েছে। এছাড়া একাত্তর সালের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, দলিলপত্র এবং দেশ-বিদেশে রক্ষিত বিভিন্ন প্রমাণপত্র দিয়েই তাদের অপরাধ প্রমাণ করা হবে। আমার দেশ মুল খবরটির পাশাপাশি ২ জন বিশিষ্টজনের মতামতও তুলে ধরে। ঢাবি অধ্যাপক বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আতাউর রহমান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুটি খুবই স্পর্শকাতর। এ ইস্যু নিয়ে নতুন করে কিছু আবার হোক, সৌদি আরবের কাছে তা কোনোভাবেই ভালো লাগবে না। এখানে পাকিস্তানের বিষয়টি জড়িত। আর সৌদি আরবের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের বিষয়টি সবার জানা। একটি ঐতিহাসিক পটভুমিতে শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। মুসলিম বিশ্বের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য এটা করা হয়েছিল। আর মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বে সৌদি আরব তখনো ছিল এখনো আছে। নিশ্চয়ই এ বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর সৌদি সফরের সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুটিকে মেলাতে চান না। তিনি বলেন, আমি এখানে সরকারকে বেনিফিট অব ডাউট দিতে চাই। সৌদি সফরের কারণে সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তদন্ত সংস্হা এবং আইনজীবী প্যানেলের নাম ঘোষণা করা থেকে বিরত থেকেছে তা বলতে চাই না। সৌদি আরবকে এখানে জড়ানো ঠিক হবে না। সরকার হয়তো তাড়াহুড়ো করে কিছু করতে চাইছে না।

Aucun commentaire:

Enregistrer un commentaire