04 mai, 2009

স্বৈরতন্ত্রী পদ্ধতি কায়েমের উদ্যোগ


স্বৈরতন্ত্রী পদ্ধতি কায়েমের উদ্যোগসিরাজুর রহমান


আমার স্কুলজীবন কলকাতায় কেটেছিল। পয়লা বৈশাখ সম্বন্ধে আমরা খুবই সচেতন ছিলাম। সবচেয়ে বেশি ধুমধাম করতেন ব্যবসায়ীরা। হালখাতা উপলক্ষে খদ্দের ও পৃষ্ঠপোষকদের আমন্ত্রণ করা হতো, প্রচুর মিষ্টান্নের সদ্ব্যবহার হতো। কলকাতার বিভিন্ন এলাকার মিলনায়তনগুলোতে অনুষ্ঠান হতো; আলোচনা, নাচ-গান, আবৃত্তি হতো। সাধারণ লোকও বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতেন। বাড়িতে ভালো কিছু খাবারের আয়োজন হতো, পরিবারপ্রধান সবাইকে কিছু না কিছু উপহার দিতেন। আমরা কিশোররা কারো না কারো বাড়িতে বসে কবিতা আবৃত্তি করতাম, কেউ কেউ গান গাইত, চায়ের সাথে মিষ্টির ব্যবস্থা থাকত কোথাও কোথাও; অন্যত্র শুধুই মুড়িমাখা আর চা। বন্ধুদের আমরা বই উপহার দিতাম। আগের ক�দিনে কলেজ স্ট্রিটে গিয়ে বই নির্বাচনে অনেক সময় ব্যয় হতো। উল্লেখ্য, বড়দেরও অনেকে উপহার দিতেন বই। আমাদের সেকালে বই ছিল প্রধান উপহারসামগ্রী। জন্মদিন, বিয়ে ইত্যাদি অনুষ্ঠানেও বই উপহার দেয়া সুরুচির পরিচায়ক ছিল। অনেক পরে ১৯৫৪ সালে আমাদের বিয়েতে আমার পুরনো বন্ধুরা উপহার দিয়েছিলেন বই। ঢাকায় এসে কলেজজীবনেও আমরা পয়লা বৈশাখ আর পয়লা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসব প্রচুর উদ্দীপনা নিয়ে উদযাপন করতাম। আমাদের বন্ধুদের মধ্যে বড়লোক কেউ ছিল না। আমাদের বহু অনুষ্ঠান হয়েছে রমনা রেসকোর্সে, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের কাছের লেকের ধারে এবং দু-একবার অব্যবহৃত মিলিটারি এয়ারফিল্ডে (বর্তমানে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর দফতর)। পরস্পরকে আমরা বই উপহার দিতাম, মুড়িমাখা ও চীনাবাদাম খাওয়া হতো। জিলাপিও থাকত কখনো কখনো। কবিতা আবৃত্তি করতে হতো সবাইকে। আমাদের বন্ধু মরহুম সুলতান আলম তার অবিস্মরণীয় কণ্ঠে গান শোনাতেন। নতুন প্রজন্মগুলোর সৌভাগ্য, তাদের অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য আমাদের তখনকার জীবনের চেয়ে অনেক বেশি। অবশ্য ভেবে আনন্দ হয় যে তার পেছনে আমাদের প্রজন্মেরও কিছু অবদান আছে। নতুনরা এখন অনেক বেশি ঘটা করে উৎসবানুষ্ঠান করেন। বসন্তোৎসব, পয়লা বৈশাখ, এমনকি ইংরেজি �নিউ ইয়ার্স ইভ�, �ভ্যালেন্টাইনস ডে� ইত্যাদি উপলক্ষে জমকালো অনুষ্ঠানগুলো আমাদের দিনে আমরা কল্পনাও করতে পারতাম না। অনেকেই এখন এসব অনুষ্ঠানের ধরন-ধারণ ও গতি-প্রকৃতি নিয়ে আপত্তি করছেন এবং কিছুটা সঙ্গত কারণে। �কিছুটা� বললাম এ জন্য যে স্যাটেলাইটের যুগে বিশ্বায়ন এখন সব কিছু চুরমার করে দিতে চাইছে। পুরনো দিনের রীতিনীতি এখন অচল। পৃথিবীর এক প্রান্তের তরুণরা যা করছে অন্য প্রান্তের তরুণরাও হুবহু সেটাই করতে চায়। তাতে করে প্রায়ই কিছু অপসংস্কৃতি, এমনকি অনৈতিকতাও কিছু কিছু আমদানি হচ্ছে। অথচ আমাদের উপরিউক্ত অনুষ্ঠানগুলোর মূল লক্ষ্যই ছিল আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা, আর সবার দেখার জন্য তুলে ধরা। মনে আছে, ঈদের দিনে বাবা-চাচারা তৈরি হয়ে ঈদগাহে যাওয়ার জন্য চৌরাস্তায় অপেক্ষা করতেন এ-গ্রাম ও-গ্রামের লোকদের জন্য। তারা বলতেন ঈদগাহের পথে বড় মিছিল আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতিকে বড় করে তুলে ধরে। কিছু বাড়াবাড়ি সত্ত্বেও এত দিন বাংলাদেশে আলোচ্য অনুষ্ঠানগুলো হয়েছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও গোষ্ঠীগুলোর ব্যানারে। সে জন্যই ঢাকায় এবারের পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান আমাকে দুঃখ দিয়েছে, পীড়িত করেছে। এ অনুষ্ঠান হয়েছে আওয়ামী লীগের ব্যানারে, জঙ্গি রীতিতে মিছিল করে। মনে হচ্ছিল বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ সংস্কৃতিসেবী নেই, অথবা আওয়ামী রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র সংস্কৃতি। এ ব্যাপারটা বাংলাদেশে বহু মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। হিটলার-মুসোলিনির আমলে নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদ ছিল একমাত্র অনুমোদিত সংস্কৃতি। প্রকাশ্যে অন্য কোনো সংস্কৃতির চর্চা কল্পনাতীত ছিল। দল ও রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্কৃতিকে যারা আলিঙ্গন করতে পারেননি, দল ও রাষ্ট্র তাদের ধ্বংস করেছে, গুঁড়িয়ে দিয়েছে� শুধু ইহুদিদেরই নয়, অন্যদেরও। নাৎসি ও ফ্যাসিস্টদের সংস্কৃতি কালের বিচারে টেকেনি, কিন্তু কয়েক কোটি মানুষ অকারণে প্রাণ হারিয়েছে, সভ্যতার অগ্রযাত্রা কয়েক যুগ পিছিয়ে গেছে। সংস্কৃতির দলীয়করণ ঢাকায় এবারের পয়লা বৈশাখের উদযাপন দেখে সত্যি সত্যি ভয় পেয়েছি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কী চায়? দেশটাকে তারা কোথায় নিয়ে যেতে চান? ক্ষমতা পাওয়ার সময় থেকেই তারা সব কিছু দলীয়করণ করছে। এ প্রসঙ্গে আগেও লিখেছি। প্রথম চোটেই তারা উচ্চশিক্ষাকে দখল করে নিয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলরদের সবাই এখন আওয়ামীপন্থী। সরকারি কলেজের অধ্যক্ষদেরও একই অবস্থা। ছাত্রলীগ ছাত্রাবাসগুলো দখল করে নিয়েছে। তাদের সুপারিশ ছাড়া কলেজে ভর্তি হওয়া কঠিন। আওয়ামী আদলে ইতিহাস নতুন করে লেখা হচ্ছে। নতুন যে শিক্ষানীতি তৈরি হতে যাচ্ছে তার চেহারাও সহজেই কল্পনা করা যায়। প্রশাসনের দলীয়করণ অনেকটা এগিয়ে গেছে। অনেক অভিজ্ঞ আমলাকে বিদায় দেয়া হয়েছে। অনভিজ্ঞ কর্মচারীদের একাধিক পদোন্নতি দিয়ে উচ্চপদে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। অযোগ্যতা বা অন্য কোনো কারণে অতীতে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে, এমন আমলাদের উচ্চপদে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। পুলিশেও একই রকম অবস্থা। বলাবলি হচ্ছে বিডিআর বিদ্রোহের পেছনেও এক শ্রেণীর আওয়ামী লীগ নেতার হাত ছিল। তারা নাকি এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন। বিডিআর�র কয়েকজন সিপাহি ৬৪ জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। বিডিআর�র দুর্নাম হয়েছে, এ বাহিনীর ছত্রখান অবস্থা। সীমান্ত প্রায় অরক্ষিত। পাশের দেশ থেকে অবাধে স্মাগলিং হচ্ছে। মাত্র গতকাল একজন বলছিলেন আমাকে। বাংলাদেশের সুতাকলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক। অন্য দিকে বেনাপোল পথে সুতা আসছে অবাধে। সেনাকর্মকর্তাদের শূন্য পদগুলো পূরণ হচ্ছে না। এ বাহিনী হতোদ্যম। সেনাপ্রধানের কাছে বিদেশীদের আনাগোনা হচ্ছে, সেখানে কী গোল পাকানো হচ্ছে কে জানে? আরেকটা গুজব হচ্ছে শেখ হাসিনা তার মরহুম পিতার অনুকরণে আরেকটা রক্ষী বাহিনী গঠন করতে চান, যে বাহিনীর আনুগত্য থাকবে একমাত্র তার প্রতি। এই আতঙ্কজনক নীলনকশা বাস্তবায়নে বাধা দিতে পারত প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। সে জন্যই বিএনপিকে রাজনীতির অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টাও শুরু হয়েছে ক্ষমতা লাভের সাথে সাথে। প্রথম চোটেই তৃণমূল স্তরে বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করে বলতে গেলে দলটির কোমর ভেঙে দেয়া হয়েছে। ১৯৯৬-২০০১ সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডার যেভাবে বিএনপি�র সভা-সমাবেশ ও মিছিল বন্ধ করা এবং সড়কগুলোকে বিএনপিমুক্ত করার চেষ্টা করেছিল সে রকম চেষ্টা আবার শুরু হয়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, এবারে বিএনপি�র অস্তিত্ব বিলোপের চেষ্টায়ও হাত দিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং তাদের সরকার একক সংসদীয় গরিষ্ঠতার জোরে। অবৈধভাবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি থেকে, এমনকি বিএনপিকেও তাদের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা সে চক্রান্তেরই অংশ। রাজনৈতিক আত্মহত্যার বাসনা? বিএনপি নেতারা যে সেটা বোঝেন না তা নয়। জেনারেল মইন ইউ আহমেদের খুঁটির জোরে ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে বিএনপি�র মূলোৎপাটন করতে চেয়েছিল সেটা শিশুও বুঝেছিল। �মাইনাস টু� নীলনকশা ব্যর্থ হওয়ার পর তারা �মাইনাস ওয়ান� বিকল্প রণকৌশল অবলম্বন করে এবং সে মাইনাস ওয়ান অবশ্যই ছিলেন খালেদা জিয়া ও বিএনপি। তিন বার এবং সর্বশেষ সাবেক সরকার যে দল গঠন করেছিল তাদের বাদ দিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করেছে আওয়ামী লীগের সাথে। বিএনপিকে ভেঙে দেয়ার সরকারি ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং অভিযোগ করা হয়েছে, একটি সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীকে সে কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারণ নির্বাচনের দু-তিন দিন আগে একটি সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী বিএনপি�র কর্মী ও নির্বাচনী এজেন্টদের ভীতি প্রদর্শন করেছে। বিচিত্র নয় যে বিডিআর�র বিদ্রোহ সম্বন্ধে আগাম খবর সংগ্রহ করার অবকাশ তাদের ছিল না। বিএনপি যদি একটি সুস্থ দল হতো তাহলে তাদের উচিত ছিল মনোবল হারিয়ে ফেলার বদলে রুখে দাঁড়ানো। নতুন উদ্যমে তাদের প্রতি জনগণের সমর্থনকে সংহত করা এবং পদে পদে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী সরকারের অপকর্মে বাধা দেয়া। কিন্তু আগেই যেমন বলেছি, তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীরা মনোবল হারিয়ে ফেলেছিলেন; কেন্দ্রীয় নেতাদের হৃত মনোবল ও পারস্পরিক কোন্দল সর্বস্তরে কর্মীকে অসহায়, বিপন্ন করে তুলেছে। সে সুযোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। তারা যদি মনে করত সংসদে বিএনপিকে হতমান করা হলেও সে দলের পেছনে প্রতিবাদপাগল বিশাল একটা কর্মী দল আছে তাহলে তারা বিএনপিকে বেশি ঘাঁটাতে সাহস পেত না। বিএনপি�র কেন্দ্রীয় নেতাদের কাউকে কাউকে রাজনৈতিক আত্মহত্যার বাসনায় পেয়ে বসেছে বলে মনে হয়। রাজধানীতে কে নেতা হবেন তা নিয়ে সাদেক হোসেন খোকা আর মির্জা আব্বাসের মধ্যে কোন্দল হচ্ছে। গ্রামের হাটের তাবিজ বেপারিদের মতোই খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন আর খোন্দকার মোশাররফ হোসেন পরস্পরের রাজনৈতিক পাঁজরে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করছেন। তথাকথিত সংস্কারপন্থীদের সাথে অন্যদের বিবাদ তো আছেই। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা যথার্থই বলেছেন প্রকৃত প্রস্তাবে বিএনপি�র এখন কোনো স্ট্যান্ডিং কমিটি নেই। এ দিকে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম অচল বললেই চলে। মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলন করেন, বিবৃতি দেন। কিন্তু রাজধানীর বাইরে দলের তৎপরতা কোথায়? হয়তো স্বাস্থ্য ভালো নয় বলে খোন্দকার দেলোয়ার জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে যেতে পারেন না। কিন্তু খালেদা জিয়া কি এমন একজন অস্থায়ী মহাসচিবও নিযুক্ত করতে পারেন না যিনি দলের বাণী এবং তৎপরতাকে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেবেন? তিনি কি বলে দিতে পারেন না যে, যারা কোন্দল করবেন তাদের দলের শীর্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হবে না? খালেদা জিয়ার করণীয় বিচিত্র নয় যে আওয়ামী লীগ সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকেও বিএনপিকে নির্বাসিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। পয়লা বৈশাখের আওয়ামীকরণ সে রকমেরই একটা সুপরিকল্পিত উদ্যোগ। আরেকটা উদ্যোগ ছিল আওয়ামী লীগের ঘটা করে শেরেবাংলা ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন। বঙ্গীয় মুসলিম জাগরণের জন্য এ কে ফজলুল হক যা করেছেন তার জের ধরেই বাংলাদেশ, এমনকি পূর্ব পাকিস্তানেরও জন্ম সম্ভব হয়েছিল। সঙ্কীর্ণ বিতর্কগুলো যখন শেষ হবে তখন সম্ভবত ইতিহাসে তাকে �সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম বাঙালি� বলা হবে। তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে আওয়ামী লীগ একটা উত্তম চাল চেলেছে। হয়তো অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই বিএনপি�র মাথায় সে কল্পনা আসেনি। তারা এখন পাল্টা চাল হিসেবে আমাদের স্বাধীনতার ধ্যান-ধারণার প্রথম উদগাতা মওলানা ভাসানীর জন্ম এবং মৃত্যু দিবস উদযাপনের কথা চিন্তা করতে পারে। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হয়তো ভাবছেন, দলের পুনর্গঠনের পর তিনি ধীরেসুস্থে স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন এবং মহাসচিব নিয়োগ করবেন। নির্বাচন কমিশনের আগের নির্দেশ অনুযায়ী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে কাউন্সিল অধিবেশন হতে হবে। কমিশন এখন বলছে, দলগুলো চাইলে সে মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। সেটা আওয়ামী লীগের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে, কিন্তু বিএনপি�র জন্য নয়। খালেদা জিয়ার উচিত হবে অতিসত্বর কাউন্সিল অধিবেশন এবং দলের পুনর্গঠন সমাধা করা, দলকে পুনরুজ্জীবিত করা। নইলে আওয়ামী লীগের নীলনকশা বেশি দূর এগিয়ে যাবে, তারা স্বৈরতন্ত্রী পদ্ধতি কায়েম করার উদ্যোগ পাকাপোক্ত করে ফেলবে। (লন্ডন, ০২.০৫.০৯) লেখকঃ সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট (সুত্র, নয়া দিগন্ত,০৫/০৫/২০০৯)
আমার স্কুলজীবন কলকাতায় কেটেছিল। পয়লা বৈশাখ সম্বন্ধে আমরা খুবই সচেতন ছিলাম। সবচেয়ে বেশি ধুমধাম করতেন ব্যবসায়ীরা। হালখাতা উপলক্ষে খদ্দের ও পৃষ্ঠপোষকদের আমন্ত্রণ করা হতো, প্রচুর মিষ্টান্নের সদ্ব্যবহার হতো। কলকাতার বিভিন্ন এলাকার মিলনায়তনগুলোতে অনুষ্ঠান হতো; আলোচনা, নাচ-গান, আবৃত্তি হতো। সাধারণ লোকও বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতেন। বাড়িতে ভালো কিছু খাবারের আয়োজন হতো, পরিবারপ্রধান সবাইকে কিছু না কিছু উপহার দিতেন। আমরা কিশোররা কারো না কারো বাড়িতে বসে কবিতা আবৃত্তি করতাম, কেউ কেউ গান গাইত, চায়ের সাথে মিষ্টির ব্যবস্থা থাকত কোথাও কোথাও; অন্যত্র শুধুই মুড়িমাখা আর চা। বন্ধুদের আমরা বই উপহার দিতাম। আগের ক�দিনে কলেজ স্ট্রিটে গিয়ে বই নির্বাচনে অনেক সময় ব্যয় হতো। উল্লেখ্য, বড়দেরও অনেকে উপহার দিতেন বই। আমাদের সেকালে বই ছিল প্রধান উপহারসামগ্রী। জন্মদিন, বিয়ে ইত্যাদি অনুষ্ঠানেও বই উপহার দেয়া সুরুচির পরিচায়ক ছিল। অনেক পরে ১৯৫৪ সালে আমাদের বিয়েতে আমার পুরনো বন্ধুরা উপহার দিয়েছিলেন বই। ঢাকায় এসে কলেজজীবনেও আমরা পয়লা বৈশাখ আর পয়লা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসব প্রচুর উদ্দীপনা নিয়ে উদযাপন করতাম। আমাদের বন্ধুদের মধ্যে বড়লোক কেউ ছিল না। আমাদের বহু অনুষ্ঠান হয়েছে রমনা রেসকোর্সে, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের কাছের লেকের ধারে এবং দু-একবার অব্যবহৃত মিলিটারি এয়ারফিল্ডে (বর্তমানে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর দফতর)। পরস্পরকে আমরা বই উপহার দিতাম, মুড়িমাখা ও চীনাবাদাম খাওয়া হতো। জিলাপিও থাকত কখনো কখনো। কবিতা আবৃত্তি করতে হতো সবাইকে। আমাদের বন্ধু মরহুম সুলতান আলম তার অবিস্মরণীয় কণ্ঠে গান শোনাতেন। নতুন প্রজন্মগুলোর সৌভাগ্য, তাদের অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য আমাদের তখনকার জীবনের চেয়ে অনেক বেশি। অবশ্য ভেবে আনন্দ হয় যে তার পেছনে আমাদের প্রজন্মেরও কিছু অবদান আছে। নতুনরা এখন অনেক বেশি ঘটা করে উৎসবানুষ্ঠান করেন। বসন্তোৎসব, পয়লা বৈশাখ, এমনকি ইংরেজি �নিউ ইয়ার্স ইভ�, �ভ্যালেন্টাইনস ডে� ইত্যাদি উপলক্ষে জমকালো অনুষ্ঠানগুলো আমাদের দিনে আমরা কল্পনাও করতে পারতাম না। অনেকেই এখন এসব অনুষ্ঠানের ধরন-ধারণ ও গতি-প্রকৃতি নিয়ে আপত্তি করছেন এবং কিছুটা সঙ্গত কারণে। �কিছুটা� বললাম এ জন্য যে স্যাটেলাইটের যুগে বিশ্বায়ন এখন সব কিছু চুরমার করে দিতে চাইছে। পুরনো দিনের রীতিনীতি এখন অচল। পৃথিবীর এক প্রান্তের তরুণরা যা করছে অন্য প্রান্তের তরুণরাও হুবহু সেটাই করতে চায়। তাতে করে প্রায়ই কিছু অপসংস্কৃতি, এমনকি অনৈতিকতাও কিছু কিছু আমদানি হচ্ছে। অথচ আমাদের উপরিউক্ত অনুষ্ঠানগুলোর মূল লক্ষ্যই ছিল আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা, আর সবার দেখার জন্য তুলে ধরা। মনে আছে, ঈদের দিনে বাবা-চাচারা তৈরি হয়ে ঈদগাহে যাওয়ার জন্য চৌরাস্তায় অপেক্ষা করতেন এ-গ্রাম ও-গ্রামের লোকদের জন্য। তারা বলতেন ঈদগাহের পথে বড় মিছিল আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতিকে বড় করে তুলে ধরে। কিছু বাড়াবাড়ি সত্ত্বেও এত দিন বাংলাদেশে আলোচ্য অনুষ্ঠানগুলো হয়েছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও গোষ্ঠীগুলোর ব্যানারে। সে জন্যই ঢাকায় এবারের পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান আমাকে দুঃখ দিয়েছে, পীড়িত করেছে। এ অনুষ্ঠান হয়েছে আওয়ামী লীগের ব্যানারে, জঙ্গি রীতিতে মিছিল করে। মনে হচ্ছিল বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ সংস্কৃতিসেবী নেই, অথবা আওয়ামী রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র সংস্কৃতি। এ ব্যাপারটা বাংলাদেশে বহু মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। হিটলার-মুসোলিনির আমলে নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদ ছিল একমাত্র অনুমোদিত সংস্কৃতি। প্রকাশ্যে অন্য কোনো সংস্কৃতির চর্চা কল্পনাতীত ছিল। দল ও রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্কৃতিকে যারা আলিঙ্গন করতে পারেননি, দল ও রাষ্ট্র তাদের ধ্বংস করেছে, গুঁড়িয়ে দিয়েছে� শুধু ইহুদিদেরই নয়, অন্যদেরও। নাৎসি ও ফ্যাসিস্টদের সংস্কৃতি কালের বিচারে টেকেনি, কিন্তু কয়েক কোটি মানুষ অকারণে প্রাণ হারিয়েছে, সভ্যতার অগ্রযাত্রা কয়েক যুগ পিছিয়ে গেছে। সংস্কৃতির দলীয়করণ ঢাকায় এবারের পয়লা বৈশাখের উদযাপন দেখে সত্যি সত্যি ভয় পেয়েছি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কী চায়? দেশটাকে তারা কোথায় নিয়ে যেতে চান? ক্ষমতা পাওয়ার সময় থেকেই তারা সব কিছু দলীয়করণ করছে। এ প্রসঙ্গে আগেও লিখেছি। প্রথম চোটেই তারা উচ্চশিক্ষাকে দখল করে নিয়েছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস চ্যান্সেলরদের সবাই এখন আওয়ামীপন্থী। সরকারি কলেজের অধ্যক্ষদেরও একই অবস্থা। ছাত্রলীগ ছাত্রাবাসগুলো দখল করে নিয়েছে। তাদের সুপারিশ ছাড়া কলেজে ভর্তি হওয়া কঠিন। আওয়ামী আদলে ইতিহাস নতুন করে লেখা হচ্ছে। নতুন যে শিক্ষানীতি তৈরি হতে যাচ্ছে তার চেহারাও সহজেই কল্পনা করা যায়। প্রশাসনের দলীয়করণ অনেকটা এগিয়ে গেছে। অনেক অভিজ্ঞ আমলাকে বিদায় দেয়া হয়েছে। অনভিজ্ঞ কর্মচারীদের একাধিক পদোন্নতি দিয়ে উচ্চপদে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। অযোগ্যতা বা অন্য কোনো কারণে অতীতে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে, এমন আমলাদের উচ্চপদে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। পুলিশেও একই রকম অবস্থা। বলাবলি হচ্ছে বিডিআর বিদ্রোহের পেছনেও এক শ্রেণীর আওয়ামী লীগ নেতার হাত ছিল। তারা নাকি এক ঢিলে দুই পাখি মেরেছেন। বিডিআর�র কয়েকজন সিপাহি ৬৪ জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। বিডিআর�র দুর্নাম হয়েছে, এ বাহিনীর ছত্রখান অবস্থা। সীমান্ত প্রায় অরক্ষিত। পাশের দেশ থেকে অবাধে স্মাগলিং হচ্ছে। মাত্র গতকাল একজন বলছিলেন আমাকে। বাংলাদেশের সুতাকলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক। অন্য দিকে বেনাপোল পথে সুতা আসছে অবাধে। সেনাকর্মকর্তাদের শূন্য পদগুলো পূরণ হচ্ছে না। এ বাহিনী হতোদ্যম। সেনাপ্রধানের কাছে বিদেশীদের আনাগোনা হচ্ছে, সেখানে কী গোল পাকানো হচ্ছে কে জানে? আরেকটা গুজব হচ্ছে শেখ হাসিনা তার মরহুম পিতার অনুকরণে আরেকটা রক্ষী বাহিনী গঠন করতে চান, যে বাহিনীর আনুগত্য থাকবে একমাত্র তার প্রতি। এই আতঙ্কজনক নীলনকশা বাস্তবায়নে বাধা দিতে পারত প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। সে জন্যই বিএনপিকে রাজনীতির অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টাও শুরু হয়েছে ক্ষমতা লাভের সাথে সাথে। প্রথম চোটেই তৃণমূল স্তরে বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করে বলতে গেলে দলটির কোমর ভেঙে দেয়া হয়েছে। ১৯৯৬-২০০১ সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডার যেভাবে বিএনপি�র সভা-সমাবেশ ও মিছিল বন্ধ করা এবং সড়কগুলোকে বিএনপিমুক্ত করার চেষ্টা করেছিল সে রকম চেষ্টা আবার শুরু হয়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, এবারে বিএনপি�র অস্তিত্ব বিলোপের চেষ্টায়ও হাত দিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং তাদের সরকার একক সংসদীয় গরিষ্ঠতার জোরে। অবৈধভাবে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি থেকে, এমনকি বিএনপিকেও তাদের কেন্দ্রীয় দফতর থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা সে চক্রান্তেরই অংশ। রাজনৈতিক আত্মহত্যার বাসনা? বিএনপি নেতারা যে সেটা বোঝেন না তা নয়। জেনারেল মইন ইউ আহমেদের খুঁটির জোরে ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে বিএনপি�র মূলোৎপাটন করতে চেয়েছিল সেটা শিশুও বুঝেছিল। �মাইনাস টু� নীলনকশা ব্যর্থ হওয়ার পর তারা �মাইনাস ওয়ান� বিকল্প রণকৌশল অবলম্বন করে এবং সে মাইনাস ওয়ান অবশ্যই ছিলেন খালেদা জিয়া ও বিএনপি। তিন বার এবং সর্বশেষ সাবেক সরকার যে দল গঠন করেছিল তাদের বাদ দিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন আলাপ-আলোচনা ও পরামর্শ করেছে আওয়ামী লীগের সাথে। বিএনপিকে ভেঙে দেয়ার সরকারি ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং অভিযোগ করা হয়েছে, একটি সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীকে সে কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। সাধারণ নির্বাচনের দু-তিন দিন আগে একটি সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী বিএনপি�র কর্মী ও নির্বাচনী এজেন্টদের ভীতি প্রদর্শন করেছে। বিচিত্র নয় যে বিডিআর�র বিদ্রোহ সম্বন্ধে আগাম খবর সংগ্রহ করার অবকাশ তাদের ছিল না। বিএনপি যদি একটি সুস্থ দল হতো তাহলে তাদের উচিত ছিল মনোবল হারিয়ে ফেলার বদলে রুখে দাঁড়ানো। নতুন উদ্যমে তাদের প্রতি জনগণের সমর্থনকে সংহত করা এবং পদে পদে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী সরকারের অপকর্মে বাধা দেয়া। কিন্তু আগেই যেমন বলেছি, তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীরা মনোবল হারিয়ে ফেলেছিলেন; কেন্দ্রীয় নেতাদের হৃত মনোবল ও পারস্পরিক কোন্দল সর্বস্তরে কর্মীকে অসহায়, বিপন্ন করে তুলেছে। সে সুযোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। তারা যদি মনে করত সংসদে বিএনপিকে হতমান করা হলেও সে দলের পেছনে প্রতিবাদপাগল বিশাল একটা কর্মী দল আছে তাহলে তারা বিএনপিকে বেশি ঘাঁটাতে সাহস পেত না। বিএনপি�র কেন্দ্রীয় নেতাদের কাউকে কাউকে রাজনৈতিক আত্মহত্যার বাসনায় পেয়ে বসেছে বলে মনে হয়। রাজধানীতে কে নেতা হবেন তা নিয়ে সাদেক হোসেন খোকা আর মির্জা আব্বাসের মধ্যে কোন্দল হচ্ছে। গ্রামের হাটের তাবিজ বেপারিদের মতোই খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন আর খোন্দকার মোশাররফ হোসেন পরস্পরের রাজনৈতিক পাঁজরে ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করছেন। তথাকথিত সংস্কারপন্থীদের সাথে অন্যদের বিবাদ তো আছেই। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা যথার্থই বলেছেন প্রকৃত প্রস্তাবে বিএনপি�র এখন কোনো স্ট্যান্ডিং কমিটি নেই। এ দিকে দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম অচল বললেই চলে। মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলন করেন, বিবৃতি দেন। কিন্তু রাজধানীর বাইরে দলের তৎপরতা কোথায়? হয়তো স্বাস্থ্য ভালো নয় বলে খোন্দকার দেলোয়ার জেলা কিংবা বিভাগীয় পর্যায়ে যেতে পারেন না। কিন্তু খালেদা জিয়া কি এমন একজন অস্থায়ী মহাসচিবও নিযুক্ত করতে পারেন না যিনি দলের বাণী এবং তৎপরতাকে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেবেন? তিনি কি বলে দিতে পারেন না যে, যারা কোন্দল করবেন তাদের দলের শীর্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হবে না? খালেদা জিয়ার করণীয় বিচিত্র নয় যে আওয়ামী লীগ সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকেও বিএনপিকে নির্বাসিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। পয়লা বৈশাখের আওয়ামীকরণ সে রকমেরই একটা সুপরিকল্পিত উদ্যোগ। আরেকটা উদ্যোগ ছিল আওয়ামী লীগের ঘটা করে শেরেবাংলা ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন। বঙ্গীয় মুসলিম জাগরণের জন্য এ কে ফজলুল হক যা করেছেন তার জের ধরেই বাংলাদেশ, এমনকি পূর্ব পাকিস্তানেরও জন্ম সম্ভব হয়েছিল। সঙ্কীর্ণ বিতর্কগুলো যখন শেষ হবে তখন সম্ভবত ইতিহাসে তাকে �সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম বাঙালি� বলা হবে। তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে আওয়ামী লীগ একটা উত্তম চাল চেলেছে। হয়তো অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই বিএনপি�র মাথায় সে কল্পনা আসেনি। তারা এখন পাল্টা চাল হিসেবে আমাদের স্বাধীনতার ধ্যান-ধারণার প্রথম উদগাতা মওলানা ভাসানীর জন্ম এবং মৃত্যু দিবস উদযাপনের কথা চিন্তা করতে পারে। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হয়তো ভাবছেন, দলের পুনর্গঠনের পর তিনি ধীরেসুস্থে স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন এবং মহাসচিব নিয়োগ করবেন। নির্বাচন কমিশনের আগের নির্দেশ অনুযায়ী ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে কাউন্সিল অধিবেশন হতে হবে। কমিশন এখন বলছে, দলগুলো চাইলে সে মেয়াদ বৃদ্ধি করা যেতে পারে। সেটা আওয়ামী লীগের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে, কিন্তু বিএনপি�র জন্য নয়। খালেদা জিয়ার উচিত হবে অতিসত্বর কাউন্সিল অধিবেশন এবং দলের পুনর্গঠন সমাধা করা, দলকে পুনরুজ্জীবিত করা। নইলে আওয়ামী লীগের নীলনকশা বেশি দূর এগিয়ে যাবে, তারা স্বৈরতন্ত্রী পদ্ধতি কায়েম করার উদ্যোগ পাকাপোক্ত করে ফেলবে। (লন্ডন, ০২.০৫.০৯) লেখকঃ সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট (সুত্র, নয়া দিগন্ত,০৫/০৫/২০০৯)

Aucun commentaire:

Enregistrer un commentaire